তুলসী পাতার উপকারিতা বা গুণাগুণ
তুলসী পাতার উপকারিতা বা গুণাগুণ আগেকার মানুষ জানতেন বলেই তুলসী পাতার ব্যবহার তারা খুব সুনিপুণভাবে করতেন। তুলসী পাতা শুধুমাত্র সর্দি-কাশিতেই নয় আরো অনেক কাজে লাগে। তুলসী পাতার উপকারিতা সম্পর্কে এই পোস্টে আমরা বিস্তারিত আলোচনা করছি।
একটা সময়ছিল যখন তুলসী তলায় প্রদীপ জ্বলত শাঁখ বাজত এখন সব অতীতের গল্প। আগেকার মানুষ নিয়ম করে সকালে তুলসীপাতা খেতেন, বাচ্চাদের খাওয়াতেন, উনারা জানতেন তুলসী পাতার উপকারিতা।
আপনি জানলে হয়তো অবাক হবেন বিদেশ থেকে বহু মানুষ আমাদের দেশে আয়ুর্বেদিক চিকিৎসা করানোর জন্য আসেন কিন্তু আমাদের দেশের মানুষ এত এত আয়ুর্বেদিক গাছ গাছড়া থাকা সত্ত্বেও এলাপাতি ওষুধের ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন। যা শরীর এবং মন দুটোর জন্যই ক্ষতিকারক।
তুলসী পাতার ৮ টি উপকারিতা
শ্বাস প্রশ্বাসের সমস্যা
এটা আমরা প্রায় প্রত্যেকেই জানি যে, ঠান্ডা লাগলে তুলসী পাতা ম্যাজিকের মতো কাজ করে। গলার সব রকম সমস্যায় তুলসী পাতা ব্যবহৃত হয়। কিন্তু সর্দি-কাশি ছাড়াও তুলসী পাতা আছে আরও কত কাজে লাগে তা হয়তো অনেকেই জানেন না।
আমরা আজকে তুলসী পাতা আর কি কি কাজে লাগে সেই সমস্ত বিষয়গুলোকে আপনাদের সামনে তুলে ধরবো। পুরো লেখাটা মনোযোগ সহকারে পড়ুন আর তুলসী পাতার উপকারিতাকা কাজে লাগান।
রোগ নিরাময় ক্ষমতা
তুলসী গাছের রোগ নিরাময় করার ক্ষমতাও অসাধারণ। তুলসী গাছ যে ঔষধি-গুণাবলি সমৃদ্ধ গাছ এটা আমরা অনেকেই জানি। কিন্তু আপনি কি জানেন, তুলসীকে নার্ভের টনিক বলা হয় এবং এটা স্মরণশক্তি বাড়ানোর জন্য বেশ উপকারী। বিশেষ করে যে সমস্ত ছেলে মেয়েরা পঠন-পাঠনের সঙ্গে যুক্ত তাদের জন্য তুলসী পাতা স্মৃতিশক্তির বৃদ্ধুতে খুব কাজে লাগে।
এছাড়াও তুলসী খুব সুন্দর ভাবে শ্বাসনালী থেকে শ্লেষ্মাঘটিত সমস্যা দূর করে। তুলসী পাতা পাকস্থলীর ও কিডনির স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত উপকারী।
আরও পড়ুন, অটল পেনশন যোজনা কেন করবেন দেখুন
পোকার কামড়
আমাদের দৈনন্দিন জীবনে আমরা মাঝে মাঝেই পোকামাকড়ের কামড় খেয়ে থাকি। এটা একটা স্বাভাবিক ঘটনা মাত্র। কিন্তু এমন কিছু পোকামাকড় আছে যাদের কামড় যথেষ্ট যন্ত্রণার বিশেষ করে বাচ্চাদের জন্য।
তুলসী পাতা হল প্রোফাইল্যাক্টিভ যা পোকামাকড় কামড়ে দিলে উপসম করতে সক্ষম। পোকার কামড়ে আক্রান্ত স্থানে তুলসী পাতার তাজা রস লাগিয়ে রাখলে পোকার কামড়ের ব্যথা ও জ্বালা থেকে অনেকটা মুক্তি পাওয়া যায়।
হার্টের অসুখ
ছোটবেলা থেকে কারো যদি তুলসী পাতা খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে তাদের হার্ট অনেকটাই নিরাপদ। তুলসী পাতায় আছে ভিটামিন সি ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট। এই উপাদানগুলো হার্টকে বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত রাখতে সহায়তা করে। তুলসী পাতা হার্টের কর্মক্ষমতা বাড়ায় ও হার্টের স্বাস্থ্য ভালো রাখে।
আরও পড়ুন, ফেসবুক থেকে ইনকাম করার সহজ রাস্তা
মানসিক চাপ
আমরা দৈনন্দিন ইন্দুর দৌড়ের জীবনে কমবেশি প্রত্যেকেই মানসিক চাপ নিয়েই বেঁচে আছি। তুলসীর ভিটামিন সি ও অন্যান্য অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলো মানসিক চাপ কমাতে সহায়তা করে। এই উপাদানগুলো নার্ভকে শান্ত করে। এছাড়াও তুলসী পাতার রস শরীরের রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখে।
মাথা ব্যথা
আমরা প্রায় প্রতি মাসেই যে সমস্ত রোগে কমবেশি আক্রান্ত হই তার ভেতরে মাথা ব্যথা ও শরীর ব্যথা সমচাইতে কমন। তুলসী পাতা মাথার এবং শরীরের ব্যথা কমাতে খুবই উপকারী। এর বিশেষ উপাদান মাংশপেশীর খিঁচুনি রোধ করতে সহায়তা করে।
আরও পড়ুন, লাইফ ইন্সুরেন্স কেন করবেন
বয়স রোধ করা
তুলসী পাতার এই ম্যাজিক সত্যিই অসাধারণ। আপনি শুনলে বা জানলে হয়তো অবাক হয়ে যাবেন যে তুলসী পাতা আমাদের বয়সকে ধরে রাখতে সাহায্য করে। বিশেষ করে মেয়েদের ক্ষেত্রে মাতৃত্বের পর বয়সের একটা ছাপ পড়তে দেখা যায়। কিন্তু বয়সের ছাপ কে পুরোপুরিভাবে নির্মূল করে দেয় তুলসী পাতা।
তুলসী পাতার ভিটামিন সি, ফাইটোনিউট্রিয়েন্টস ও এসেন্সিয়াল অয়েলগুলো চমৎকার অ্যান্টিঅক্সিডেন্টের হিসেবে কাজ করে যা বয়সজনিত সমস্যাগুলো কমায়। তুলসী পাতাকে যৌবন চিরকাল ধরে রাখার টনিক ও মনে করেন কেউ কেউ।
তাই আপনি যদি নিয়মিত তুলসীপাতা খান তাহলে আপনি ৫০ শে গিয়েও ৩০ থেকে যাবেন।
ত্বকের সমস্যা
ত্বকের সমস্যা কম বেশি ছোট বড় আমাদের প্রত্যেকেরই আছে। তুলসী পাতার রস ত্বকের জন্য খুবই উপকারী। তুলসী পাতা বেঁটে সারা মুখে লাগিয়ে রাখলে ত্বক সুন্দর ও মসৃণ হয়। এ ছাড়াও তিল তেলের মধ্যে তুলসী পাতা ফেলে হালকা গরম করে ত্বকে লাগালে ত্বকের যে কোনও সমস্যায় বেশ উপকার পাওয়া যায়। এ ছাড়াও ত্বকের কোনও অংশ পুড়ে গেলে তুলসীর রস এবং নারকেলের তেল ফেটিয়ে লাগালে জ্বালা কমবে এবং সেখানে কোনও দাগ থাকবে না।
আরও পড়ুনঃঃ – aegon life insurance